3

শিকার করার শর্তাবলি

প্রশ্ন: 194080

ইসলামে কি শিকার করা বৈধ? শিকার করার শর্তাবলি কী কী? আমি কি গোপনে শিকার করতে পারব? কারণ আমি যে দেশে বসবাস করি সেখানে শিকার করা নিষিদ্ধ।

উত্তর

সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য, দুরুদ ও সালাম বর্ষিত হোক আল্লাহর রাসূলের প্রতি। পর সমাচার:

এক:

স্থলভাগের প্রাণী শিকার করার মূল বিধান হচ্ছে বৈধতা। তবে যে ব্যক্তি হজ্জ বা উমরার জন্য ইহরাম বেঁধেছে কিংবা ইহরাম না বাঁধলেও হারাম এলাকার মধ্যে থাকে তার জন্য বৈধ নয়।

অন্যদিকে মাছসহ জলভাগের অন্যান্য প্রাণী শিকার করা ইহরামরত ব্যক্তি ও অন্য সবার জন্য বৈধ।

সুতরাং কেউ যদি বৈধ প্রাণী শিকার করে তা বিক্রি করা, খাওয়া বা দান করা প্রভৃতির মাধ্যমে উপকৃত হয় তাহলে আলেমদের ঐকমত্য অনুসারে তা করতে কোনো নিষেধ নেই।

দেখুন: (152261) নং প্রশ্নের উত্তর।

দুই:

স্থলভাগে শিকারের শর্তাবলি শিকারী, শিকার ও শিকারের উপকরণের সাথে সম্পৃক্ত। আমরা সংক্ষেপে এর বিবরণ দিব:

১। শিকারীর শিকার সঠিক হওয়ার জন্য নিম্নোক্ত শর্তাবলি আবশ্যক:

  • শিকারী ব্যক্তি আকলবান ও প্রাপ্তবয়স্ক হতে হবে। এটি অধিকাংশ ফকীহের মত (হানাফী, মালেকী ও হাম্বলীদের, শাফেয়ী মাযহাবেরও একটি মত)। কেননা তাদের দৃষ্টিতে অপ্রাপ্তবয়স্ক ও আকলহীন ব্যক্তি যবাই করার উপযুক্ত নয়। সুতরাং সে শিকার করারও উপযুক্ত নয়। এবং যেহেতু শিকার করার ক্ষেত্রে ইচ্ছা ও বিসমিল্লাহ বলা প্রয়োজন। কিন্তু আকলহীন লোকের পক্ষ থেকে এ দুটোর কোনটি সঠিক হয় না। হানাফী ও হাম্বলীরা এভাবে কারণ দর্শিয়ে থাকেন।
  • শিকারী ব্যক্তি হালাল অবস্থায় থাকা। যদি সে হজ্জ অথবা উমরার নিয়তে ইহরামরত অবস্থায় থাকে তাহলে সে যা শিকার করেছে তা খাওয়া যাবে না। বরং সেটি মৃত প্রাণী হিসেবে গণ্য হবে।
  • শিকারী ব্যক্তি এমন হবে যার যবাই হালাল। অর্থাৎ মুসলিম বা আহলে-কিতাব হবে। সুতরাং মুশরিক, অগ্নিপূজারী, সাম্যবাদী নাস্তিক, মুরতাদ প্রমুখ শ্রেণীর মানুষের শিকার হালাল হবে না।

অতএব, পুরোপুরিভাবে নামায পরিত্যাগ করা ব্যক্তির শিকার ও যবাই হালাল হবে না। কারণ সে কাফের মুরতাদ।

  • শিকারী ব্যক্তি শিকারের উপকরণ নিক্ষেপ অথবা প্রেরণের সময় আল্লাহর নাম নিবে। এটি অধিকাংশ ফকীহের (হানাফী, মালেকী ও হাম্বলীদের) মত।
  • শিকারের উপকরণ প্রেরণের মাধ্যমে শিকারী ব্যক্তির উদ্দেশ্য হবে বৈধ কিছু শিকার করা। সে যদি কোনো তীর বা শিকারী প্রাণী কোন মানুষ বা গৃহপালিত প্রাণী বা পাথরকে উদ্দেশ্য করে নিক্ষেপ করে কিন্তু সেটি কোনো শিকারের পশুকে আঘাত করে তাহলে হালাল হবে না।

২। শিকারকৃত প্রাণীর ক্ষেত্রে শর্তাবলি:

  • শিকারকৃত প্রাণী এমন জন্তু হবে যার মাংস খাওয়া জায়েয। এটি সকল ফকীহের মত, যদি গোশত খাওয়ার জন্য প্রাণীটি শিকার করা হয়ে থাকে। নিছক শিকার করার ব্যাপারে তাদের মাঝে মতভেদ রয়েছে: হানাফী ও মালেকীরা মনে করেন যে শিকারকৃত প্রাণীর মাংস বৈধ হওয়া শর্ত নয়। বরং তাদের দৃষ্টিতে যে প্রাণীর মাংস খাওয়া বৈধ, আর যে প্রাণীর মাংস খাওয়া বৈধ নয় উভয়টি শিকার করা যাবে; যাতে করে শিকারকৃত প্রাণীর চামড়া, চুল অথবা পালক থেকে উপকৃত হওয়া যায় অথবা এর ক্ষতি প্রতিহত করা যায়। অন্যদিকে শাফেয়ী ও হাম্বলীদের দৃষ্টিতে মাংস হালাল নয় এমন প্রাণী শিকার করা অথবা যবাই করা জায়েয নয়।
  • শিকারকৃত প্রাণী এমন বন্য প্রাণী হবে যে নিজের পা বা ডানা দিয়ে মানুষকে প্রতিহত করে। বন্য দ্বারা উদ্দেশ্য যা স্বভাবগতভাবে বন্য হওয়া, অর্থাৎ যে প্রাণীকে কৌশল খাটানো ছাড়া পাকড়াও করা যায় না। অন্যদিকে যে সমস্ত গৃহপালিত প্রাণীর মালিক রয়েছে সেগুলো শিকার করা জায়েয নেই।
  • পবিত্র হারাম এলাকার শিকার না হওয়া। ফকীহরা একমত যে হারাম এলাকার স্থলপ্রাণী শিকার করা (অর্থাৎ যার সন্তান জন্মদান ও বংশধারা স্থলে হয়ে থাকে) হারাম; চাই তার মাংস খাওয়া বৈধ হোক কিংবা অবৈধ।
  • শিকার লম্বা সময় শিকারীর অগোচরে না থাকা এবং শিকারী শিকারকে তালাশ না করে বসে থাকা। যদি শিকার শিকারীর চোখের আড়ালে চলে যায় এবং শিকারী সেটির তালাশ না করে বসে থাকে, তাহলে সেই শিকার খাওয়া যাবে না। আর যদি তার অগোচরে চলে না যায় কিংবা অগোচরে গেলেও সে বসে না থেকে তালাশ করতে থাকে তাহলে এই প্রাণী খাওয়া যাবে। ফকীহরা সামগ্রিকভাবে এ ব্যাপারে একমত।
  • যদি কোনো শিকারকে লক্ষ্য করে অস্ত্র নিক্ষেপ করার ফলে তার অঙ্গহানি হয়, কিন্তু সেই প্রাণীটি বেঁচে গিয়ে স্বাভাবিক জীবন লাভ করে তাহলে উক্ত পৃথক হওয়া অঙ্গ হারাম। এ ব্যাপারে ফকীহদের মাঝে কোনো মতভেদ নেই। কেননা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: ‘পশু জীবিত থাকা অবস্থায় তার থেকে যে অংশ কেটে ফেলা হয়েছে সেটা মৃত।’[সুনানে আবু দাউদ (২৮৫৮), শাইখ আলবানী সহীহ আবু দাউদে হাদীসটিকে সহিহ বলেছেন] আর যে জীবিত প্রাণীর অঙ্গহানি হয়েছে সেই প্রাণীকে অবশ্যই যবাই করতে হবে। অন্যথায় সর্বসম্মতিক্রমে সেই প্রাণী হারাম।

অন্যদিকে জলভাগের শিকারের ক্ষেত্রে এই সমস্ত শর্তাবলি প্রযোজ্য নয়। অধিকাংশ ফকীহের মতে (মালেকী, হাম্বলী ও শাফেয়ীদের বিশুদ্ধতম মত) সমুদ্রের সকল প্রাণী শিকার করা ও খাওয়া বৈধ; সেটি মাছ হোক বা অন্য কিছু। কারণ আল্লাহ তাআলা বলেছেন:  أُحِل لَكُمْ صَيْدُ الْبَحْرِ وَطَعَامُهُ  ‘তোমাদের জন্য হালাল করা হয়েছে জলের শিকার ও খাদ্য।’ অর্থাৎ জলের শিকারযোগ্য প্রাণী।

সুতরাং যে সমস্ত প্রাণী কেবল জলেই বাস করে সেগুলো সবই হালাল; হোক তা জীবিত কিংবা মৃত।

৩।  শিকারের উপকরণের শর্তাবলি:

শিকারের উপকরণ দুই ধরনের: জড় উপকরণ অথবা প্রাণী।

(ক) জড় উপকরণ:

  • শিকারের অস্ত্র এমন ধারালো হওয়া যাতে করে এটি কেটে বা বিদ্ধ করে গোশতে ক্ষত সৃষ্টি করতে এবং প্রভাব ফেলতে পারে। অন্যথায় যবেহ ছাড়া তা হালাল হবে না। অস্ত্রটি লোহার হওয়া শর্ত নয়। যে কোনো ধারালো অস্ত্র দিয়ে শিকার করা বৈধ, হোক সেটি লোহা কিংবা ধারালো কাঠ অথবা মসৃণ পাথর বা অনুরূপ কিছু; যা শরীরের ভেতরে ঢুকে যায়।
  • অস্ত্রটি এর ধার দিয়ে শিকারকে আক্রান্ত করে তাকে ক্ষত-বিক্ষত করা শর্ত। ক্ষত-বিক্ষত হওয়ার মাধ্যমে মৃত্যু হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হতে হবে। নতুবা সেটি খাওয়া হালাল হবে না। কারণ যে প্রাণী শিকারের অস্ত্রের পার্শ্ব অথবা ভারের কারণে নিহত হয় তা মাওকূযাহ (আঘাতের মাধ্যমে মৃত) প্রাণী হিসেবে গণ্য হবে, যা হালাল নয়।
  • গুলি করে শিকার করা হালাল। যদি আপনি বন্দুকের মাধ্যমে পাখি কিংবা অন্যান্য প্রাণী যেমন: খরগোশ, হরিণ প্রভৃতিকে গুলি করেন এবং গুলি নিক্ষেপের সময় আল্লাহর নাম নেন (বিসমিল্লাহ বলেন) তাহলে সেটি হালাল হবে; যদিও আপনি প্রাণীটিকে মৃত অবস্থায় পান।
  • ফকীহদের মতে বিষাক্ত তীর দিয়ে শিকার করা জায়েয নেই; যদি ব্যক্তি নিশ্চিত হয় অথবা ধারণা করে যে বিষ ঐ শিকারকৃত প্রাণী হত্যায় ভূমিকা রেখেছে বা এ ধরনের সম্ভাবনা থাকে। কারণ এ অবস্থায় প্রাণী হত্যায় হালাল ও হারাম বিষয়ের সমন্বয় ঘটেছে। ফলে হারামকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। যেমনিভাবে কোনো প্রাণী হত্যায় যদি অগ্নি-উপাসক ও মুসলিমের তীর একত্র হয় (তাহলে অগ্নি-উপাসকের তীরকে প্রাধান্য দিয়ে হারাম গণ্য করা হবে)। আর যদি এ ধরনের সম্ভাবনা না থাকে তাহলে হারাম হবে না।

(খ) প্রাণী:

প্রশিক্ষিত প্রাণী দিয়ে শিকার করা জায়েয। এ ধরনের প্রাণীগুলোকে جوارح (জাওয়ারেহ) বলা হয়ে থাকে। সেটি হতে পারে কুকুর, হিংস্র কোনো প্রাণী কিংবা দন্ত বা নখরবিশিষ্ট পাখি। এক্ষেত্রে প্রশিক্ষিত কুকুর, চিতাবাঘ, বাঘ, সিংহ, বাজপাখিসহ সব ধরনের প্রশিক্ষিত প্রাণী সমান। যেমন: ঈগল, বাজপাখি, শ্যেন প্রভৃতি।

মূলনীতি হলো: যে সকল প্রাণী শিক্ষা গ্রহণ করার সক্ষমতা রাখে এবং যেগুলোকে শেখানো যায় সেগুলো দিয়ে শিকার করা মৌলিকভাবে জায়েয।

প্রাণীর ক্ষেত্রে নিম্নোক্ত শর্তাবলি প্রযোজ্য:

  • প্রাণী প্রশিক্ষিত হতে হবে। এ ব্যাপারে ফকীহরা একমত। কারণ আল্লাহ তা’আলা বলেন:

وَمَا عَلَّمْتُمْ مِنَ الْجَوَارِحِ

“তোমরা শিকারে পাঠানোর জন্য যে সমস্ত পশু-পাখিকে প্রশিক্ষণ দিয়েছ।”[সূরা মায়েদা: ৪]

  • প্রশিক্ষিত পশু শিকারকৃত পশুর শরীরের যে কোনো অঙ্গে আঘাত করবে। এটি মালেকী ও হাম্বলীদের মত। হানাফী মাযহাবেও এই মতের উপর ফতোয়া প্রদান করা হয়। আর শাফেয়ীদের কাছে প্রসিদ্ধতম মতের বিপরীত মত। সুতরাং যদি শিকারী পশু তার সাথে সংঘর্ষের মাধ্যমে কিংবা এমন কামড় দেওয়ার মাধ্যমে তাকে হত্যা করে যাতে প্রাণীটি ক্ষত-বিক্ষত হয় না, তাহলে সেটি বৈধ হবে না। যেমনিভাবে শিকারের জড় অস্ত্রের প্রস্থ বা ভার দিয়ে হত্যা করা হলে বৈধ হয় না। অনুরূপভাবে যদি (প্রশিক্ষিত) কুকুরকে সে প্রেরণ করে আর সেটি প্রাণীকে আঘাত করে তার ঘাড় ভেঙে দেয় কিন্তু তাকে ক্ষত-বিক্ষত করে না কিংবা তার বুকের উপর ভর দিয়ে তাকে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা করে তাহলেও বৈধ হবে না।
  • প্রশিক্ষিত পশুকে কোনো মুসলিম বা আহলে-কিতাব ‘বিসমিল্লাহ’ বলার সাথে সাথে প্রেরণ করবে। যদি সে নিজে নিজে চলে যায় কিংবা মালিকের হাত থেকে ছুটে যায় অথবা তাকে প্রেরণের সময় মালিক ‘বিসমিল্লাহ’ না বলে আর সে শিকার নিয়ে হত্যা করে ফেলে তাহলে মৌলিকভাবে সেটি খাওয়া যাবে না।
  • পশু প্রেরণের পর সেটি অন্য কোনো কাজে ব্যস্ত হবে না; যাতে করে শিকারকে প্রেরণের সাথে সম্পৃক্ত করা যায়। হানাফী ও মালেকীদের গ্রন্থে এই শর্তটি পাওয়া যায়।
  • ফকীহরা একমত যে যদি শিকারে এমন ব্যক্তি অংশ নেয় যার শিকার হালাল যেমন: মুসলিম অথবা খ্রিষ্টান আর এমন ব্যক্তিও অংশ নেয় যার শিকার হালাল নয়, যেমন: অগ্নিপূজারী অথবা মূর্তিপূজারী, তাহলে এই শিকার হারাম হবে এবং খাওয়া যাবে না। এক্ষেত্রে হারামের দিককে হালালের দিকের উপর প্রাধান্য দেওয়া হবে। সুতরাং কোনো অগ্নিপূজারী যদি মুসলিমের সাথে অংশ নিয়ে দুইজনই শিকারকে উদ্দেশ্য করে নিক্ষেপ করে অথবা দুজনই প্রশিক্ষিত প্রাণী প্রেরণ করে, তাহলে উক্ত শিকার হারাম হবে। কারণ এই প্রাণী হত্যায় হালাল ও হারামের মিশ্রণ ঘটেছে, ফলে আমরা হারামকে প্রাধান্য দিয়েছি।[দেখুন: আল-মাউসুয়াতুল ফিকহিয়্যাহ (২৮/১১৭-১৪২)]

তিন:

যদি রাষ্ট্রীয় নিয়মকানুন শিকারের বৈধতা প্রদান না করে অথবা নিষেধ করে তাহলে শিকার করা জায়েয নেই। কারণ এতে করে ঐ রাষ্ট্রের নিয়মের বিরুদ্ধাচরণ করা হয় যে রাষ্ট্রে ব্যক্তি ভিসা ও কর্মের চুক্তিতে প্রবেশ করেছে। তার জন্য এই চুক্তি মেনে চলা এবং তাদের দেওয়া শর্ত পূরণ করা আবশ্যক। তারা তাকে তার রাষ্ট্রে কেবল ঐ নিয়মকানুন মেনে চলার শর্তেই প্রবেশের অনুমতি প্রদান করেছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে রাষ্ট্রের শিকারে নিষেধাজ্ঞা জনকল্যাণের স্বার্থেই হয়ে থাকে, এ অবস্থায় তা মেনে চলা আবশ্যক।

আর যদি ধরে নেওয়া হয় যে তা মেনে চলা আবশ্যক নয়; তবুও আইন লঙ্ঘন করার ফলে শাস্তির সম্মুখীন হওয়া এমনকি দেশান্তর হওয়ারও সম্ভাবনা থাকে। আকলবান ব্যক্তি কখনো নিজের এবং নিজ পরিবারের ক্ষতি করবে না।

আল্লাহই সর্বজ্ঞ।

সূত্র

সূত্র

ইসলাম জিজ্ঞাসা ও জবাব

answer

সংশ্লিষ্ট প্রশ্নোত্তরসমূহ

at email

নিউজলেটার

ওয়েবসাইটের ইমেইল ভিত্তিক নিউজলেটারে সাবস্ক্রাইব করুন

phone

ইসলাম জিজ্ঞাসা ও জবাব অ্যাপ্লিকেশন

কন্টেন্টে আরও দ্রুত পৌঁছতে ও ইন্টারনেট ছাড়া ব্রাউজ করতে

download iosdownload android