জনৈক নও-মুসলিম নারীর জন্য সূরা ফাতিহা পাঠ কষ্টসাধ্য

প্রশ্ন: 5410

আমি ইংরেজিতে (এটি আমার মাতৃভাষা) কথা বলি। আরবী ভাষা শেখার চেষ্টা করছি। ইসলাম গ্রহণ করার পর আমি সূরা ফাতিহা শিখেছি। কিন্তু, কিছু হরফ আমি উচ্চারণ করতে পারি না। কিছু হরফ আমি ভুল উচ্চারণ করি। একটা ফিকহের কিতাবে আমি পড়েছি যে কেউ যদি সূরা ফাতিহার একটি হরফও ভুল পড়ে তাহলে তার নামায বাতিল হয়ে যাবে। আমি আমার পড়া ঠিক করার জন্য কিছু রেকর্ডেড পড়া শুনি। আমি এখনো ভুল করি। এটি নিয়ে আমি খুব চিন্তিত হয়ে পড়েছি। পড়ার সময় আমি হরফের উচ্চারণ ঠিকভাবে করার জন্য অনেক বেশি থামি। প্রায়ই আমি একাধিক বার সূরা ফাতিহা পড়ি। আমার করণীয় কী?

উত্তরের সার-সংক্ষেপ

'যে ব্যক্তি সূরা ফাতিহায় ভুল করে তার নামায বাতিল'— কথাটি এ রকম ব্যাপক নয়। সূরা ফাতিহা পড়ায় সংঘটিত প্রতিটি ভুল নামায বাতিল করে না। বরং নামায তখনই বাতিল হয় যখন কেউ সূরা ফাতিহা থেকে কিছু অংশ বাদ দেয় অথবা শব্দের শেষ বর্ণের স্বরধ্বনি (ই’রাব) বদলে ফেলে; যার ফলে অর্থে পরিবর্তিত হয়ে যায়। অধিকন্তু, নামায বাতিল হওয়ার বিধান এমন ব্যক্তির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য যে সূরা ফাতিহা শুদ্ধভাবে পড়তে পারে অথবা শিখতে পারার সক্ষমতা থাকলেও শেখেনি। কিন্তু যে ব্যক্তি তা করতে অক্ষম, সে নিজের সাধ্য অনুযায়ী পড়বে। এতে তার কোনো ক্ষতি হবে না। কারণ আল্লাহ কাউকে সাধ্যাতীত কিছু চাপিয়ে দেন না।

উত্তর

সূরা ফাতিহা পাঠ কি নামাযের রুকন?

১. আলেমদের মতামতগুলোর মধ্যে সঠিক মতানুসারে সূরা ফাতিহা পড়া নামাযের একটি রুকন। ইমাম, মুক্তাদি ও একাকী নামায আদায়কারীর উপর এ সূরা পড়া ওয়াজিব।

আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন: নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: যে ব্যক্তি এমন কোনো নামায পড়ে যে নামাযে সে সূরা ফাতিহা পাঠ করে না তার ঐ নামায অপূর্ণাঙ্গ (তিনবার) তথা অসম্পূর্ণ।” এক ব্যক্তি আবু হুরাইরাকে প্রশ্ন করল: আমরা তো ইমামের পিছনে থাকি? উত্তরে আবু হুরাইরা বললেন: তুমি তোমার মনে মনে পড়বে। কারণ, আমি আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছি, আল্লাহ তাআলা বলেন: আমি নামাযকে (সূরা ফাতিহা)-কে আমার ও আমার বান্দার মাঝে আধাআধি ভাগ করে নিয়েছি; অর্ধেক আমার জন্য এবং অর্ধেক আমার বান্দার জন্য। আর আমার বান্দা তাই পায় যা সে প্রার্থনা করে।’ সুতরাং বান্দা যখন বলে: ٱلۡحَمۡدُ لِلَّهِ رَبِّ ٱلۡعَٰلَمِينَ   তখন আল্লাহ তাআলা বলেন: আমার বান্দা আমার প্রশংসা করল।” অতঃপর বান্দা যখন বলে: ٱلرَّحۡمَٰنِ ٱلرَّحِيمِ  তখন আল্লাহ বলেন: বান্দা আমার স্তুতি বর্ণনা করল। আবার বান্দা যখন বলে: مَٰلِكِ يَوۡمِ ٱلدِّينِ    তখন আল্লাহ তাআলা বলেন: বান্দা আমার গৌরব বর্ণনা করল।” বান্দা যখন বলে:  إِيَّاكَ نَعۡبُدُ وَإِيَّاكَ نَسۡتَعِينُ   তখন আল্লাহ বলেন: এটা আমার ও আমার বান্দার মাঝে। আর আমার বান্দা তাই পায় যা সে প্রার্থনা করে।” অতঃপর বান্দা যখন বলে:

ٱهۡدِنَا ٱلصِّرَٰطَ ٱلۡمُسۡتَقِيمَ 6 صِرَٰطَ ٱلَّذِينَ أَنۡعَمۡتَ عَلَيۡهِمۡ غَيۡرِ ٱلۡمَغۡضُوبِ عَلَيۡهِمۡ وَلَا ٱلضَّآلِّينَ 

 তখন আল্লাহ বলেন: এটি আমার বান্দার জন্য। আমার বান্দা যা চায় তাই পাবে।”[হাদীসটি মুসলিম (৩৯৫) বর্ণনা করেন]

মুসল্লীর উপর বিশুদ্ধ আরবী ভাষায় সূরা ফাতিহা পড়া ওয়াজিব। কারণ আমরা সেভাবে কুরআন পড়ার ব্যাপারে আদিষ্ট যেভাবে তা অবতীর্ণ হয়েছে।

যে ব্যক্তির জন্য সূরা ফাতিহা পড়া কষ্টসাধ্য তার হুকুম:

২. যে ব্যক্তির জিহ্বায় কোনো সমস্যার কারণে কিংবা অনারব হওয়ার কারণে বিশুদ্ধ উচ্চারণ করা তার জন্য কঠিন হয় তার উপর সঠিক উচ্চারণ শেখা ও সাধ্যমত উচ্চারণ শুধরে নেওয়া ওয়াজিব।

যদি সে না পারে: তাহলে তার উপর থেকে এর আবশ্যকতা মওকূফ হয়ে যাবে। কারণ আল্লাহ তা’আলা কাউকে সাধ্যাতীত কিছু চাপিয়ে দেন না।

আল্লাহ তা’আলা বলেন:

لَا يُكَلِّفُ اللَّهُ نَفْسًا إِلَّا وُسْعَهَا

“আল্লাহ কাউকে সাধ্যের বাইরে কিছু চাপিয়ে দেন না।”[সূরা বাকারা: ২৮৬]

যে ব্যক্তি সূরা ফাতিহা পড়তে পুরোপুরি অক্ষম তার হুকুম:

৩. যে ব্যক্তি সূরা ফাতিহা পড়তে পুরোপুরি অক্ষম কিংবা শিখতেও অক্ষম কিংবা সে সদ্য ইসলাম গ্রহণ করেছে এবং নামাযের সময় এসে পড়েছে, অথচ তার শেখার মত যথেষ্ট সময় নেই তার জন্য নিম্নোক্ত হাদীসে একটি সমাধান ও উপায় রয়েছে:

আব্দুল্লাহ ইবনে আবী আওফা বর্ণনা করেন: নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর কাছে এক লোক এসে বলল: ‘আমি কুরআন মুখস্থ করতে পারি না। অতএব আমাকে এমন কিছু শিখিয়ে দিন যা কুরআনের পরিবর্তে যথেষ্ট হবে।’ নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, তুমি বলবে: سُبْحَانَ اللَّهُ وَالْحَمْدُ لِلَّهِ وَلَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهِ وَاللَّهُ أَكْبَرُ وَلَا حَوْلَ وَلَا قُوَّةَ إِلَّا بِاللَّهِ “সুবহানাল্লাহ, ওয়াল হামদুলিল্লাহ, ওয়া লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু, ওয়াল্লাহু আকবার, ওয়া লা-হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ।” তখন লোকটি হাত দিয়ে তা গণনার ইশারা করে তারপর বলল: ‘এটা তো আমার রবের জন্য; আমার জন্য কি (বলব)?’ তিনি বললেন: “তুমি বলবে: اللّهُمَّ اغْفِرلِي وارْحَمْنِي وَاهْدِنِىْ وَارْزُقْنِىْ وعافِنِيْ ‘হে আল্লাহ! আমাকে ক্ষমা করুন, দয়া করুন, হেদায়াত দান করুন, রিযিক দিন এবং নিরাপদে রাখুন’।” লোকটি অন্য হাতে তা গণনা করে উঠে দাঁড়াল।[হাদীসটি নাসাঈ (৯২৪) ও আবু দাউদ (৮৩২) বর্ণনা করেন। হাদীসটির সনদকে ইমাম মুনযিরী ‘আত-তারগীব ওয়াত-তারহীব’ (২/৪৩০) গ্রন্থে উত্তম বলে গণ্য করেছেন। হাফেয ইবনে হাজার ‘আত-তালখীসুল হাবীর’ (১/২৩৬) গ্রন্থে এটিকে হাসান হিসেবে উল্লেখ করেছেন।]

ইবনে কুদামা রাহিমাহুল্লাহ বলেন: ‘যদি সে কুরআনের কোনো কিছু ভালোভাবে পড়তে না পারে, আবার ওয়াক্ত শেষ হওয়ার আগে তার জন্য শেখা সম্ভবপর না হয় তাহলে তার জন্য سبحان الله والحمد لله ولا إله إلا الله والله أكبر ولا حول ولا قوة إلا بالله (সুবহানাল্লাহ ওয়াল-হামদুলিল্লাহ, ওয়া লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ, ওয়াল্লাহু আকবার, ওয়া লা-হাওলা ওয়া লা-কুওয়াতা ইল্লাবিল্লাহ) পড়া আবশ্যক হবে।’ দলিল হলো আবু দাউদ কর্তৃক বর্ণিত হাদিস: এক ব্যক্তি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে এসে বললেন: আমি কুরআন মুখস্থ করতে পারি না। অতএব আমাকে এমন কিছু শিখিয়ে দিন যা কুরআনের বদলে যথেষ্ট হবে। তিনি বললেন: তুমি বলবে: سبحان الله والحمد لله ولا إله إلا الله والله أكبر ولا حول ولا قوة إلا بالله (সুবহানাল্লাহ ওয়াল-হামদুলিল্লাহ, ওয়া লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ, ওয়াল্লাহু আকবার, ওয়া লা-হাওলা ওয়া লা-কুওয়াতা ইল্লাবিল্লাহ।) লোকটি বলল: ‘এই কথা আল্লাহর জন্য; আমার জন্য কী?’ তিনি বললেন: তুমি বলবে: اَللَّهُمَّ اغْفِرْ لِيْ وَارْحَمْنِيْ وَارْزُقْنِيْ وَاهْدِنِيْ وَعَافِنِيْ (আল্লাহুম্মাগফিরলি ওয়ার-হামনি ওয়ারযুকনি ওয়াহদিনি ওয়া-‘আফিনী। অর্থ: হে আল্লাহ! আমাকে ক্ষমা করে দিন, আমার প্রতি দয়া করুন। আমাকে রিযিক দিন এবং আমাকে নিরাপত্তা দিন।) তার উপর প্রথম পাঁচটি বাক্যের অতিরিক্ত কিছু পড়া আবশ্যক হবে না। কারণ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এই পাঁচটি বাক্যের মধ্যেই বিষয়টিকে সীমাবদ্ধ রেখেছিলেন। পরে যখন লোকটি অতিরিক্ত কিছু চায় তখন তিনি তাকে বাড়িয়ে দেন।’[সমাপ্ত]

যদি সে সূরা ফাতিহার কিছু অংশ পড়তে পারে, কিন্তু বাকি অংশ পড়তে না পারে তাহলে সে যতটুকু পড়তে পারে ততটুকু পড়া তার উপর আবশ্যক হবে।

সূরা ফাতিহার যে অংশটুকু সে ভালো পারে সেটি সে সূরা ফাতিহার পরিমাণ অনুসারে পুনরায় পড়বে। (অর্থাৎ যাতে করে তার সর্বমোট সাত আয়াত পরিমাণ পড়া হয় যা সূরা ফাতিহার আয়াত সংখ্যা)

ইবনে কুদামা বলেছেন: ‘এই সম্ভাবনাও রয়েছে যে, তার জন্য কেবল আলহামদুলিল্লাহ, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ ও আল্লাহু আকবার বলাই যথেষ্ট। কারণ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (পড়তে অক্ষম ব্যক্তিকে) বলেছেন: “তোমার কাছে যদি কুরআন থাকে তাহলে সেটা পড়বে। আর না থাকলে আল্লাহর তাহমীদ (আলহামদুলিল্লাহ), তাহলীল (লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ) ও তাকবীর (আল্লাহু আকবার) পড়বে।”[হাদীসটি আবু দাউ্দ বর্ণনা করেন][আল-মুগনী (১/১৮৯-১৯০)]

কেউ যদি সূরা ফাতিহা পড়তে গিয়ে একটা হরফে ভুল করে তাহলে কি তার নামায বাতিল হবে?

কোন নামাযী সূরা ফাতিহার কোনো একটি হরফ পড়তে ভুল করলে নামায বাতিল হয়ে যায় মর্মে আপনি যা পড়েছেন বিষয়টি আসলে সে রকম ব্যাপক না। সূরা ফাতিহায় যে কোনো ভুলের কারণে নামায বাতিল হয় না। বরং তখনই নামায বাতিল হয় যখন সূরা ফাতিহা থেকে কোনো অংশ বাদ পড়ে অথবা শব্দের শেষ বর্ণের স্বরধ্বনিতে (ই’রাব) এমন পরিবর্তন আনেন যা অর্থকে বদলে দেয়। অধিকন্তু এই বিধান এমন ব্যক্তির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য যে সূরা ফাতিহা পুরোটা সঠিকভাবে পড়তে পারে অথবা শিখতে সক্ষম হলেও শেখেনি।

কিন্তু যে ব্যক্তি সূরা ফাতিহা পড়তে অক্ষম সে তার সাধ্যমত সূরা ফাতিহা পড়বে, এতে তার কোনো ক্ষতি হবে না। কারণ আল্লাহ কাউকে তার সাধ্যের বাইরে কিছু চাপিয়ে দেন না। আলেমদের বক্তব্য অনুসারে অক্ষমতা থাকলে কোনো কিছু আবশ্যক হয় না।[দেখুন: আল-মুগনী (২/১৫৪)]

এ অবস্থায় সে সূরা ফাতিহার যতটুকু পারে ততটুকু পড়তে হবে। তারপর এর সাথে তাসবীহ, তাহমীদ, তাকবীর ও তাহলীল পড়বে যাতে করে সূরা ফাতিহা যে অংশ সে পড়তে পারেনি এর ক্ষতিপূরণ হয়ে যায়।[দেখুন: আল-মাজমূ (৩/৩৭৫)]

সূরা ফাতিহায় ভুল করে এমন ব্যক্তির নামায কি শুদ্ধ হবে?

শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়্যা রাহিমাহুল্লাহুকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল:

‘তাকে জিজ্ঞাসা করা হয়: কেউ যদি সূরা ফাতিহা পড়তে গিয়ে ভুল করে তাহলে তার নামায কি শুদ্ধ হবে; নাকি শুদ্ধ হবে না?

তিনি উত্তর দেন: ‘সূরা ফাতিহায় যে ভুলের কারণে অর্থ বদলে যায় না এমন ভুল করলে ব্যক্তির নামায সঠিক হবে; হোক সে ব্যক্তি ইমাম কিংবা একাকী নামাযী। ... অন্যদিকে যে ভুল অর্থ বদলে দেয় এবং পাঠকারী সেটার অর্থ জেনে থাকে: যেমন সে যদি পড়ে صِرَاطَ الَّذِينَ أَنْعَمْتُ عَلَيْهِمْ  এবং সে জেনে থাকে যে এটি ضمير المتكلم (উত্তম পুরুষের সর্বনাম) তাহলে তার নামায সঠিক হবে না। আর যদি সে না জেনে থাকে যে অর্থ বদলে গেছে এবং মনে করে যে এটি ضمير المخاطب (মধ্যম পুরুষের সর্বনাম) তাহলে (তার নামায বাতিল হবে কিনা) এ নিয়ে মতভেদ রয়েছে। আল্লাহই সর্বজ্ঞ।[সমাপ্ত][মাজমুউল ফাতাওয়া (২২/৪৪৩)]

তাকে আরো জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল যে কেউ যদি নামাযে কোনো স্থানে যের দেওয়ার পরিবর্তে যবর দিয়ে পড়ে তাহলে এর বিধান কী?

তিনি উত্তর দেন: যদি সে জেনে এমনটি করে তাহলে তার নামায বাতিল হয়ে যাবে। কারণ সে তার নামায নিয়ে খেল-তামাশা করেছে। আর যদি না জেনে থাকে, তাহলে দুটি মতের মাঝে একটি মত অনুসারে বাতিল হবে না।[সমাপ্ত][মাজমুউল ফাতাওয়া (২২/৪৪৪)]

নও-মুসলিম নারীর প্রতি উপদেশ:

হে আমার নও-মুসলিম বোন! আপনার করণীয় হচ্ছে বেশি বেশি চর্চা ও অনুশীলন করা এবং এমন মুসলিম বোনের কাছে পড়া যিনি কুরআন পাঠে দক্ষ। অধিকন্তু আপনার উচিত ক্যাসেট ও রেডিওতে দক্ষ ক্বারীদের পাঠকৃত সূরাগুলো বেশি করে শোনা।

দুশ্চিন্তা এবং দুর্ভাবনার কিছু নেই। আল্লাহ তার সৃষ্টিকুলের অন্তর সম্পর্কে অবহিত। কে প্রচেষ্টা চালাচ্ছে আর কে অবহেলা করছে; সেটি তিনি জানেন।

আপনি কুরআন পড়তে গিয়ে যে কষ্টের সম্মুখীন হচ্ছেন, সেটি আপনার নেকী বাড়িয়ে দিচ্ছে। আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা বর্ণনা করেন: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন: “কুরআন পাঠে দক্ষ ব্যক্তি উচ্চ মর্যাদাসম্পন্ন লিপিকর ও নেককার ফেরেশতাদের সাথে থাকবে। আর যে ব্যক্তি কুরআন পাঠ করে এবং পড়ার সময় তোতলায়, পড়া তার জন্য কঠিন সে ব্যক্তির জন্য রয়েছে দুটি নেকী।”[হাদীসটি মুসলিম (৭৯৮) বর্ণনা করেন]

ইমাম নববী রাহিমাহুল্লাহ বলেন: ‘যে ব্যক্তি পড়ার সময় তোতলায় সে মূলতঃ নিজের মুখস্থের দুর্বলতার জন্য বারংবার পড়ে। তার রয়েছে দুটি নেকী: একটি পড়ার কারণে। আর অন্যটি পড়তে গিয়ে তোতলানোর সম্মুখীন হওয়ার কারণে।’[সমাপ্ত]

একাধিকবার সূরা ফাতিহা পড়ার প্রয়োজন নেই। কারণ এটি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আদর্শ নয়। বরং এটি কুমন্ত্রণার দরজা খুলে দেয়, নামাযে ঘাটতি সৃষ্টি করে, নামাযের একনিষ্ঠতা ব্যাহত করে, অর্থ অনুধাবন ও মনোযোগ প্রদানের কাজ থেকে মানুষকে ব্যস্ত রাখে এবং শয়তানকে আনন্দিত করে। কারণ শয়তান এর মাধ্যমে মুসল্লীকে কষ্ট দিতে চায়। যাতে করে সে শেষ পর্যন্ত নামাযের ব্যাপারেই বিরক্ত হয়ে পড়ে। আল্লাহ তা’আলা দয়াময়, পরম করুণাময়। তিনি আমাদের প্রতি আমাদের চেয়েও দয়ালু। তিনি আমাদের উপর আমাদের সাধ্যের বাইরে কিছু চাপিয়ে দেন না।

আল্লাহই সর্বজ্ঞ।

সূত্র

সূত্র

ইসলাম জিজ্ঞাসা ও জবাব

at email

নিউজলেটার

ওয়েবসাইটের ইমেইল ভিত্তিক নিউজলেটারে সাবস্ক্রাইব করুন

phone

ইসলাম জিজ্ঞাসা ও জবাব অ্যাপ্লিকেশন

কন্টেন্টে আরও দ্রুত পৌঁছতে ও ইন্টারনেট ছাড়া ব্রাউজ করতে

download iosdownload android