এই প্রশ্নটি ‘লুক্বাতা’ (কুড়িয়ে পাওয়া জিনিস সম্পর্কে) সম্পর্কে যা ইসলামী ফিকহের অন্যতম একটি অধ্যায়।
'লুক্বাতা' বলতে বোঝানো হয়: কোনো ব্যক্তির হারানো সম্পদ। এই মহান দ্বীন ইসলাম মানুষের সম্পদ সংরক্ষণ করা ও রক্ষণাবেক্ষণের বিধান নিয়ে এসেছে, মুসলিমের সম্পদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন ও তা সংরক্ষণ করার নির্দেশ নিয়ে এসেছে। এর মধ্যে লুক্বাতা (কুড়িয়ে পাওয়া জিনিস)ও অন্তর্ভুক্ত।
যদি কোনো ব্যক্তির কাছ থেকে কোনো সম্পদ হারিয়ে যায়, তবে এর তিনটি অবস্থা হতে পারে:
প্রথম অবস্থা: এটি এমন কিছু হওয়া যা সাধারণ মানুষের কাছে তেমন গুরুত্ব বহন করে না। যেমন: চাবুক, রুটি, একটি ফল, লাঠি ইত্যাদি। এগুলো যে ব্যক্তি পায় সে-ই এগুলোর মালিক হয়ে যায় এবং কোনো ঘোষণা ছাড়াই তা ব্যবহার করতে পারে। এর সপক্ষে দলীল হচ্ছে জাবির রাদিয়াল্লাহু আনহু কর্তৃক বর্ণিত হাদীস, তিনি বলেন: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম লাঠি, চাবুক এবং দড়ি কুড়িয়ে পেলে তা মানুষের জন্য ব্যবহার করার ক্ষেত্রে ছাড় দিয়েছেন।[আবু দাউদ হাদীসটি বর্ণনা করেন]
দ্বিতীয় অবস্থা: এমন কোনো প্রাণী হওয়া যে নিজে ছোট ছোট হিংস্র প্রাণীকে প্রতিহত করতে পারে। প্রাণীটি বিশালাকায় হওয়ার কারণে; যেমন: উট, ঘোড়া, গরু বা খচ্চর। কিংবা উড়তে পারার কারণে; যেমন: পাখি। কিংবা দ্রুত দৌড়াতে পারার কারণে; যেমন: হরিণ। অথবা দাঁত দিয়ে আত্মরক্ষা করতে পারার কারণে; যেমন: চিতা। এই ধরনের প্রাণী কুড়িয়ে নেওয়া হারাম। যে এটি কুড়িয়ে নিয়েছে সে ঘোষণা দিলেও মালিকানা লাভ করবে না। যেহেতু রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে হারানো উটের ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন: “তোমার হস্তক্ষেপের কোন প্রয়োজন নেই?! উটের সাথে তো পানির মশক আছে, উটের পাও আছে। সে নিজে পানি পান করতে পারে, গাছপালা খেতে পারে। এক পর্যায়ে তার মালিক তাকে খুঁজে পাবে।”[হাদীসটি বুখারী ও মুসলিম বর্ণনা করেছেন]
উমর রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেছেন: “যে ব্যক্তি হারানো উট হস্তগত করে, সে-ই পথভ্রষ্ট।” তথা ভুলকারী। এই হাদিসে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হুকুম দিয়েছেন যেন হারানো উটকে কুড়িয়ে নেওয়া না হয়। বরং এটি পানি পান করবে, গাছপালা খেয়ে বেঁচে থাকবে। এক পর্যায়ে এর মালিক তাকে পেয়ে যাবে।
এই হুকুমের অধিভুক্ত হবে বড় বড় সরঞ্জামাদি; যেমন: বিশাল পাতিল, কাঠ, লোহা ইত্যাদি, যেগুলো নিজ স্থানে সংরক্ষিত থাকে, নষ্ট হয় না এবং স্থানান্তরিত হয় না। হারিয়ে যাওয়া প্রাণীর মত এসব হস্তগত করা সব না নেওয়া আরো অগ্রাধিকার ভিত্তিতে নিষিদ্ধ।
তৃতীয় অবস্থা: হারিয়ে যাওয়া জিনিস অন্য সব ধরনের সম্পদের অন্তর্ভুক্ত হওয়া। যেমন: টাকা-পয়সা, মালপত্র, এবং এমন প্রাণী যেগুলো ছোট হিংস্র প্রাণীদের হাত থেকে নিজেকে রক্ষা করতে পারে না। যথা: ছাগল, উটের বাচ্চা, গরুর বাছুর ইত্যাদি। এই প্রকারের সম্পদ যিনি পাবেন তিনি যদি নিজেকে খেয়ানত করা থেকে নিরাপদ মনে করেন তাহলে তার জন্য এটি কুড়িয়ে নেওয়া বৈধ হবে। এটি আবার তিন প্রকার—
প্রথম প্রকার: খাওয়ার উপযুক্ত পশু। যেমন উটের বাছুর, ছাগল, মুরগি ইত্যাদি। যে ব্যক্তি এমন কিছু কুড়িয়ে পাবে তার উপর অনিবার্য তিনটি এখতিয়ারের মধ্যে যেটি মালিকের স্বার্থ অধিক রক্ষাকারী সেটি গ্রহণ করা:
-সে এটি খেয়ে ফেলবে। আর অবিলম্বে মালিককে এর মূল্য পরিশোধ করা তার উপর আবশ্যক হবে।
-এর বিবরণ জেনে নিয়ে একে বিক্রি করে এর মূল্য মালিকের জন্য সংরক্ষণ করে রেখে দিবে।
-এর হেফাজত করবে, নিজের সম্পদ থেকে এর লালন-পালনের জন্য খরচ করবে। তবে এটাকে নিজের মালিকানায় নিবে না। মালিক এটি নিতে আসলে তখন মালিকের কাছে খরচের অর্থ দাবী করবে। কারণ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে ছাগল সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেছেন: “এটা কুড়িয়ে নাও। এটি হয়তো তোমার জন্য, নয়তো তোমার ভাইয়ের জন্য, কিংবা নেকড়ের জন্য।”[সহিহ বুখারী ও সহিহ মুসলিম] অর্থাৎ ছাগল দুর্বল ও ধ্বংসের ঝুঁকিতে আছে। ছাগলের অবস্থা হলো হয়তো তুমি এটাকে হস্তগত করবে, নতুবা অন্য কেউ হস্তগত করবে নতুবা নেকড়ে এটাকে খেয়ে ফেলবে।
ইবনে কাইয়্যিম রাহিমাহুল্লাহ এই হাদীসের ব্যাখ্যায় বলেন: “এই হাদীস থেকে প্রমাণিত হয়: হারানো ছাগল কুড়িয়ে নেওয়া বৈধ। যদি মালিক না আসে তবে যিনি কুড়িয়ে পেলেন তিনি এর মালিক হয়ে যাবেন। কুড়িয়ে পাওয়া ব্যক্তির একাধিক এখতিয়ার থাকবে। তৎক্ষণাৎ ছাগলটি খেয়ে এর মূল্য বহন করা নতুবা বিক্রি করে দাম রেখে দিবে কিংবা ছাগলটি রেখে দিয়ে নিজের সম্পদ থেকে লালন-পালন করবে। এই তিনটির মাঝে যে কোনোটি করার ব্যাপারে সে স্বাধীন। আলেমরা একমত যে যদি সে এটি খাওয়ার আগে এর মালিক চলে আসে, তাহলে মালিক নিয়ে নিতে পারবে।”
দ্বিতীয় প্রকার: পচনশীল জিনিস। যেমন: তরমুজ, ফলমূল। এগুলো যিনি কুড়িয়ে পাবেন তিনি নিম্নোক্ত ব্যবস্থাগুলোর মধ্যে যেটি মালিকের স্বার্থ অধিক রক্ষাকারী সে ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। সে ব্যবস্থাগুলো হচ্ছে: এটি খেয়ে এর মূল্য মালিককে দেওয়া অথবা এটি বিক্রি করে মালিক আসা পর্যন্ত এর মূল্য সংরক্ষণ করা।
তৃতীয় প্রকার: প্রথম দুই প্রকার ছাড়া অন্যান্য সব সম্পদ। যেমন: নগদ অর্থ, থালা-বাসন ইত্যাদি। এগুলো আমানত হিসেবে নিজের কাছে সংরক্ষণ করা আবশ্যক। জনসমাগম স্থলে এগুলোর ব্যাপারে ঘোষণা দিতে হবে।
কুড়িয়ে পাওয়া বস্তুর ক্ষেত্রে ব্যক্তি যদি নিজেকে নিরাপদ মনে না করে এবং এ ব্যাপারে যে ঘোষণা দিতে হবে তা দেওয়ার মত সক্ষমতা যদি তার না থাকে, তাহলে তার জন্য কুড়িয়ে নেওয়া বৈধ হবে না। কারণ যাইদ ইবনে খালিদ আল-জুহানী রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত হাদীস আছে: তিনি বলেছেন: নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে কুড়িয়ে পাওয়া স্বর্ণ বা অর্থের ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করা হলো, তিনি বললেন: “এর বাঁধন ও থলে চিহ্নিত করে রাখো, তারপর এক বছর ঘোষণা করো। যদি তার মালিককে জানতে না পারো, তাহলে তুমি এটি খরচ করে ফেলো। তবে এটি তোমার কাছে আমানত হিসেবে থাকবে। কোনো দিন মালিক এসে চাইলে তাকে ফেরত দেবে।” আর ছাগল সম্পর্কে তাকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বললেন: “তুমি এটি গ্রহণ কর, এটি হয়তো তোমার জন্য, নয়তো তোমার অন্য ভাইয়ের জন্য, নয়তো নেকড়ের জন্য।” হারিয়ে যাওয়া উট সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বললেন: “তোমার হস্তক্ষেপের কোন প্রয়োজন নেই?! উটের সাথে পানি আছে, উটের পা আছে। সে পানি পান করতে পারবে এবং গাছপালা খেতে পারবে যতক্ষণ না মালিক তাকে পেয়ে যায়।”[হাদীসটি বুখারী ও মুসলিম বর্ণনা করেন]
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বাণী: “বাঁধন ও থলে চিহ্নিত করে রাখো” এখানে বাঁধন বলতে উদ্দেশ্য যা দিয়ে থলের মুখ বাঁধা হয়। আর থলে হচ্ছে যে পাত্রের মাঝে বস্তুটি থাকে।
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বাণী: “এক বছর ঘোষণা করো” বলতে বোঝানো হয়েছে: মানুষের সমাবেশ স্থলে যেমন: বাজার, মসজিদের দরজা, সামাজিক অনুষ্ঠান ইত্যাদিতে। কুড়িয়ে নেওয়ার প্রথম সপ্তাহে প্রতিদিন ঘোষণা দিতে হবে। কারণ ঐ সপ্তাহে মালিক ফিরে আসার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি। এরপর থেকে ঘোষণার ক্ষেত্রে মানুষের প্রচলন অনুযায়ী ঘোষণা দিবে।
(প্রাচীন যুগে এগুলোই ছিল ঘোষণার পদ্ধতি। বর্তমান সময়ে কুড়িয়ে নেওয়া ব্যক্তি উপযুক্ত মাধ্যম ব্যবহার করে ঘোষণা করবে। মূলকথা হলো: এর দ্বারা যেন উদ্দেশ্য হাসিল হয়। অর্থাৎ মালিককে খুঁজে পেতে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালানো হয়।)
উক্ত হাদীস আরো প্রমাণ করে যে কুড়িয়ে পাওয়া বস্তু চিনে রাখা আবশ্যক। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বাণী: “এর বাঁধন ও থলে চিনে রাখো” প্রমাণ করে যে এর বৈশিষ্ট্য জেনে রাখা আবশ্যক। ফলে মালিক এসে এর যথাযথ বর্ণনা দিলেই তাকে সেটি প্রদান করা হবে। আর যদি তার বিবরণ প্রকৃত অবস্থার চেয়ে ভিন্ন হয় তাহলে তাকে দেওয়া জায়েয হবে না।
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বাণী: “যদি তুমি এর মালিক জানতে না পারো, তাহলে খরচ করে ফেলো” এটি প্রমাণ করে যে কুড়িয়ে নেওয়া ব্যক্তি এক বছর ঘোষণা দেওয়ার পর সে এর মালিক হয়ে যায়। কিন্তু কুড়িয়ে পাওয়া জিনিসের বৈশিষ্ট্যাবলি চেনার আগে তার জন্য এতে হস্তক্ষেপ করা যথাযথ হবে না। অর্থাৎ সে এর বাঁধন, থলে, পরিমাণ, ধরন এবং বৈশিষ্ট্য জেনে রাখবে; যাতে করে এক বছর পর মালিক এসে যদি যথাযথ বিবরণ দেয় তাহলে তাকে সেটি দিতে পারে। কারণ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: “কোনো দিন মালিক এসে চাইলে তাকে ফেরত দেবে।”
উপর্যুক্ত আলোচনা থেকে বোঝা যায় যে কুড়িয়ে পাওয়া সম্পদের ব্যাপারে কয়েকটি বিষয় আবশ্যক; যথা:
এক: কেউ যদি নিজের ব্যাপারে কুড়িয়ে পাওয়া জিনিসের আমানত রক্ষা করা ও ঘোষণা দেয়ার সক্ষমতার ব্যাপারে নিশ্চিত হয় তবেই সে কুড়িয়ে পাওয়া জিনিস নিতে এগিয়ে আসবে। যে নিজেকে এর ব্যাপারে নিরাপদ মনে করে না তার জন্য এটি গ্রহণ করা বৈধ নয়। যদি সে এটি গ্রহণ করে তাহলে সে আত্মসাৎকারী হিসেবে গণ্য হবে। কারণ সে অন্য ব্যক্তির সম্পদ এমনভাবে গ্রহণ করেছে যেভাবে গ্রহণ করা জায়েয নেই। আর যেহেতু এটি গ্রহণ করা অন্যের সম্পদ বিনষ্ট করার অন্তর্ভুক্ত।
দুই: কোন পাওয়া জিনিস হস্তগত করার আগে অবশ্যই এর বিবরণ নিখুঁতভাবে সংরক্ষণ করতে হবে; এর থলে, এর বাঁধন, এর পরিমাণ, এর ধরন ও প্রকার ইত্যাদি। এর পাত্র দ্বারা উদ্দেশ্য যেটার ভেতরে জিনিসটি পাওয়া গিয়েছে; সেটা কোনো পলিথিন হতে পারে কিংবা কোন কাপড়খণ্ড হতে পারে। আর বাঁধন বলতে উদ্দেশ্য হচ্ছে: যা দিয়ে জিনিসটিকে বাঁধা হয়েছে। কেননা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিবরণ সংরক্ষণ করার নির্দেশ দিয়েছেন। আর 'নির্দেশ' আবশ্যক করাকে দাবি করে।
তিন: পুরো এক বছর জিনিসটি পাওয়ার ব্যাপারে ঘোষণা দিতে হবে। প্রথম সপ্তাহে প্রতিদিন ঘোষণা দিতে হবে। এরপর প্রচলিত প্রথা অনুযায়ী ঘোষণা দিতে হবে। ঘোষণার সময় উদাহরণস্বরূপ এভাবে বলবে: ‘এমন বস্তু কার হারানো গিয়েছে?’ কিংবা এ ধরণের অন্য কোন কথা। ঘোষণা হবে মানুষের সমাবেশ স্থলে, যেমন: বাজারে। কিংবা নামাযের সময়গুলোতে মসজিদের দরজায়। মসজিদের ভেতরে কুড়িয়ে পাওয়া বস্তু ঘোষণা করা নিষিদ্ধ; কারণ মসজিদ এ উদ্দেশ্যে নির্মিত হয়নি। কারণ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: “কেউ যদি মসজিদের ভেতরে কোনো ব্যক্তিকে হারানো জিনিসের ঘোষণা করতে শুনে যেন সে বলে দেয়: 'আল্লাহ তোমার জিনিসটি তোমাকে ফিরিয়ে না দিন'।”
চার: যদি দাবীদার এসে এর সঠিক বিবরণ দিতে পারে তবে কোনো সাক্ষ্য-প্রমাণ বা কসমের ছাড়াই তাকে সেটা ফেরত দিতে হবে। কারণ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এমনটি নির্দেশ দিয়েছে। আর যেহেতু বিবরণ বলতে পারা সাক্ষ্য-প্রমাণ ও কসমের স্থলাভিষিক্ত। বরং তার বিবরণ প্রদান করাটা সাক্ষ্য-প্রমাণ ও কসমের চেয়ে বেশি স্পষ্ট ও সত্য হতে পারে। কুড়িয়ে পাওয়া জিনিস থেকে যা কিছু বৃদ্ধি পেয়েছে সেটাও ফেরত দিতে হবে; বৃদ্ধিপ্রাপ্ত জিনিস সংযুক্ত হোক কিংবা আলাদা হোক। যদি দাবীদার ব্যক্তি বিবরণ দিতে না পারে তাহলে তাকে জিনিসটি দেওয়া হবে না। কারণ এই জিনিস তার হাতে একটি আমানত। সেজন্য যে ব্যক্তি এই জিনিসের মালিক হিসেবে নিজেকে প্রমাণ করতে পারেনি তাকে দেওয়া জায়েয হবে না।
পাঁচ: যদি পূর্ণ এক বছর ঘোষণা করার পরেও মালিক না আসে তখন জিনিসটির উপর কুড়িয়ে নেওয়া ব্যক্তির মালিকানা সাব্যস্ত হবে। তবে সে ব্যবহার করার আগে এর বিবরণ সংরক্ষণ করে রাখতে হবে; যাতে করে পরে যে কোনো সময় মালিক আসলে জিনিসটি থাকলে তাকে ফেরত দিতে পারে কিংবা জিনিসটি না থাকলে এর বদলে অন্য কিছু তাকে ফেরত দিতে পারে। কারণ জিনিসটির মালিক ফেরত আসার মাধ্যমে কুড়িয়ে পাওয়া ব্যক্তির মালিকানা বিলুপ্ত হয়ে যাবে।
দ্রষ্টব্য:
হারানো বস্তু সম্পর্কে ইসলামের দিক-নির্দেশনা থেকে উপলব্ধি করা যায় ইসলাম সম্পদের প্রতি ও সম্পদ সংরক্ষণের প্রতি কতবেশি যত্নশীল, একজন মুসলিমের সম্পদের পবিত্রতা ও তার সম্পদ রক্ষায় কতবেশি যত্নবান। মোটকথা, এর থেকে আমরা উপলব্ধি করি ইসলাম কল্যাণের কাজে পারস্পরিক সহযোগিতার প্রতি উৎসাহ প্রদান করে।
আমরা মহান আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করি তিনি যেন আমাদের সকলকে ইসলামের উপর প্রতিষ্ঠিত রাখেন এবং আমাদেরকে মুসলিম অবস্থায় মৃত্যু দান করেন।