সংরক্ষণ করুন
  • New List
আরও
    সংরক্ষণ করুন
    • New List
3,42608/রজব/1443 , 09/ফেব্রুয়ারী/2022

কারণ যেটাই হোক না কেন পরীক্ষাতে নকল করা নাজায়েয

প্রশ্ন: 175744

পরীক্ষার সময় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে নকলের যে ছড়াছড়ি তা থেকে আমরা কিভাবে বিরত থাকতে পারি? আমরা বেশি নম্বর পাওয়ার লোভে নকল করি। আমাদের পিতামাতারা আমাদেরকে এ দিকে ঠেলে দেন। কারণ আমরা ভয় পাই যদি ফেল করি কিংবা কম নম্বর পাই তারা আমাদেরকে অপমান করবেন ও শাস্তি দিবেন। যেহেতু আমরা সবসময় নকল করি না। কিন্তু যখনই আমরা অনুভব করি যে, আমাদেরকে এক্সিলেন্ট নম্বর পেতে হবে তখনই আমরা নকলের দিকে ধাবিত হই। দুঃখের বিষয় হলো এখন এটি অভ্যাসে পরিণত হয়েছে; যা থেকে মুক্ত হওয়া কঠিন। আপনাদের উপদেশ কী? কোন এক কারণে কোন এক শিক্ষিকা আমার এক বান্ধবীকে বাসায় পরীক্ষা দেয়ার অনুমতি দিয়েছিলেন এবং তিনি তার কাছ থেকে অঙ্গীকার ও শপথ নিয়েছিলেন যে, তাকে যে এই অনুমতি দেয়া হয়েছে এ ব্যাপারে সে কাউকে জানাবে না। আমার বান্ধবী বাসায় গিয়ে নকল করে পরীক্ষা দিয়েছে এবং ভালো নম্বর পেয়েছে; তবে এক্সিলেন্ট নম্বর নয়। সে এই যুক্তিতে নকল করেছে যে, শিক্ষিকা তার কাছ থেকে নকল না করার ব্যাপারে অঙ্গীকার নেয়নি। বরং অন্যদেরকে না জানানোর ব্যাপারে অঙ্গীকার নিয়েছিল। তা সত্ত্বেও সে আল্লাহ্‌র শাস্তির ভয়ে ও পরিবারের শাস্তির ভীতসন্ত্রস্ত। তার করণীয় কি?

উত্তর

সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য। দুরুদ ও সালাম বর্ষিত হোক আল্লাহর

নকল ও জালিয়াতি এটি হারাম। তা বেচাকেনার ক্ষেত্রে হোক কিংবা পরীক্ষার ক্ষেত্রে হোক কিংবা অন্য যে কোন ক্ষেত্রে হোক। যেহেতু আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত হাদিসে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: যে ব্যক্তি জালিয়াতি করে সে আমার দলভুক্ত নয়।[সহিহ মুসলিম (১০২)]

শাইখ উছাইমীন (রহঃ) বলেন:

পরীক্ষাতে নকল করা হারাম। বরং কবিরা গুনাহ। বিশেষতঃ এ নকলের উপরে ভবিষ্যতের অনেক বিষয় নির্ভর করে: বেতন, পদ মর্যাদা ইত্যাদি যেগুলো রেজাল্টের সাথে সম্পৃক্ত।[ফাতাওয়া নুরুন আলাদ দারব থেকে (২/২৪) সংক্ষেপে সমাপ্ত]

অনুরূপভাবে পিতামাতার সন্তুষ্টি লাভের জন্যেও নকল করা জায়েয নয়। কারণ আল্লাহ্‌কে অসন্তুষ্ট করে পিতামাতাকে সন্তুষ্ট করা জায়েয নয়; সেটি যে অবস্থায় হোক না কেন। যেহেতু ইবনে হিব্বান (রহঃ) আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেন: রাসূলুল্লাহ্‌ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: যে ব্যক্তি আল্লাহ্‌কে অসন্তুষ্ট করার মাধ্যমে মানুষের সন্তুষ্টি সন্ধান করে আল্লাহ্‌ তার প্রতি অসন্তুষ্ট হন এবং মানুষকেও অসন্তুষ্ট করে দেন।[আলবানী ‘সহিহুত তারগীব’ গ্রন্থে (২/২৭১) হাদিসটিকে সহিহ বলেছেন]

ইমাম বাইহাকী ‘শুআবুল ঈমান’ গ্রন্থে (২০৯) ইবনে মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেন: “সন্তুষ্টি হচ্ছে আপনি আল্লাহ্‌কে অসন্তুষ্ট করে মানুষকে সন্তুষ্ট না করা”।

নিঃসন্দেহে পিতামাতা পছন্দ করেন না যে, তাদের ছেলেমেয়ে নকল করে বড় হোক কিংবা নকল করে এক্সিলেন্ট নম্বর পাক। বরং তারা চান যে, তারা তাদের নিজেদের পরিশ্রম ও কর্ম দিয়ে সফলতা অর্জন করুক।

যে ছাত্র ভাল ফলাফল ও ভাল নম্বর পেতে চায় তার উচিত পরিশ্রম, অধ্যবসায় ও ভাল পড়াশুনা করা; নকল করা নয়। কারণ মানুষের মন নকলকে ঘৃণা করে এবং মানুষ নকলকারীকের ঘৃণা করে। এটি সত্যবাদিতা ও আমানতদারিতার প্রতিপক্ষ; আর মিথ্যা ও খেয়ানতের মিত্র। বুদ্ধিমানের উচিত এটাকে বর্জন করা।

যদি কোন মুসলিম জানতে পারেন যে, এটাই হচ্ছে নকলের স্বরূপ; তখন তিনি পরিশ্রমী ছাত্রদের অনুসরণ করবেন এবং নিজেকে এই নিন্দনীয় অভ্যাস থেকে দূরে সরিয়ে আনবেন।

পক্ষান্তরে কোন শিক্ষিকা জনৈক ছাত্রীকে তার বাসায় পরীক্ষা দিতে দেয়া এটিও আমানতের খেয়ানত; শিক্ষিকাকে যে আমনতের দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল। এবং এটি অন্যদের প্রতি অবিচার; যাদেরকে এ সুযোগ দেয়া হয়নি। এমনকি যদি আইন-কানুন সেটাকে অনুমোদন করে তবুও। এটি নিশ্চিত যে, আইন সেটাকে অনুমোদন করে না। এটাই এই ছাত্রীর জন্য নকল করাকে সহজ করে দিয়েছে। যার মাধ্যমে সে এমন নম্বর ও পজিশন পাবে; সে যেটার উপযুক্ত নয়।

শাইখ বিন বাযকে পরীক্ষায় নকল করা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল যে, যদি সেটা শিক্ষকের জ্ঞাতসারে ঘটে থাকে?

জবাবে তিনি বলেন: পরীক্ষায় নকল করা হারাম; যেমনিভাবে লেনদেনে সেটা হারাম। কোন পরীক্ষার কোন সাবজেক্টে কারো নকল করার অধিকার নেই। যদি কোন শিক্ষক এতে সন্তুষ্ট থাকে তাহলে সে শিক্ষকও গুনাহতে ও খেয়ানতের অংশীদার।[মাজমুউ ফাতাওয়া বিন বায (৬/৩৯৭) থেকে সমাপ্ত]

আল্লাহই সর্বজ্ঞ।

সূত্র

সূত্র

ইসলাম জিজ্ঞাসা ও জবাব

টেক্সট ফরম্যাটিং অপশন

at email

নিউজ লেটার পেতে সাবস্ক্রাইব করুন

নিয়মিত আপডেট ও ওয়েবসাইটের নিত্য নতুন তথ্য পেতে ইমেইল দিয়ে সাবস্ক্রাইব করুন

phone

ইসলাম প্রশ্ন এবং উত্তর অ্যাপ্লিকেশন

কন্টেন্টে আরও দ্রুত অনুসরণ করুন এবং ইন্টারনেট ছাড়া ব্রাউজ করার সুযোগ

download iosdownload android