সংরক্ষণ করুন
  • New List
আরও
    সংরক্ষণ করুন
    • New List
90202/শাওয়াল/1446 , 31/মার্চ/2025

শরীয়ত বিরোধী বিষয় থাকা সত্ত্বেও অর্থনীতি ও হিসাববিজ্ঞান সাবজেক্টে পড়ার হুকুম

প্রশ্ন: 141894

কমার্সের সাবজেক্টগুলো যেমন: হিসাববিজ্ঞান, ব্যবসায় শিক্ষা ও অর্থনীতি এবং পেশাগত দক্ষতার সাথে সম্পৃক্ত কিছু সাবজেক্ট ও হিসাববিজ্ঞানের সাথে সম্পৃক্ত কিছু সাবজেক্ট পড়া ও পাঠদান করার হুকুম কী? এ ধরনের সাবজেক্টগুলো পড়তে গেলে এমন কিছু জিনিস পড়তে হয় যেগুলো ইসলামে জায়েয নেই। যে অংশটি পড়া আবশ্যকীয়; যেমন: সুদ, লেনদেনে সুদ, বীমা, ইংরেজী আইন, কর প্রভৃতি। ছাত্রদেরকে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হলে এই পাঠগুলো তাদেরকে পড়তেই হবে।

উত্তর

সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য। দুরুদ ও সালাম বর্ষিত হোক আল্লাহর

ব্যবসা ও হিসাববিজ্ঞান বিষয়ক সাবজেক্টগুলো পড়তে কোনো সমস্যা নেই, যদিও এগুলোতে হারাম কিছু বিষয় থাকে; যেমন: সুদ ও কর। তবে শর্ত হলো শিক্ষার্থী অথবা শিক্ষক এই বিশ্বাস রাখবে যে এগুলোর মাঝে আল্লাহ যা হারাম করেছেন তা হারাম। কিন্তু সে এগুলো পড়ছে যাতে করে এতে থাকা মন্দ ও বাতিলকে জানতে পারে অথবা এগুলোর মধ্য থেকে যে বিষয়গুলো শরীয়তের সাথে সাংঘর্ষিক নয় তা থেকে উপকৃত হতে পারে। কেননা সকল কোম্পানি ও ইস্টাবলিশমেন্ট এই প্রকার শিক্ষার মুখাপেক্ষী ও এর থেকে উপকৃত হওয়ার মুখাপেক্ষী। আইন পড়ার ক্ষেত্রেও একই বিধান প্রযোজ্য; যাতে করে আইনে থাকা অনিষ্ট ও বাতিলকে চেনা যায় কিংবা এর থেকে সতর্ক করা যায় কিংবা এতে বিদ্যমান উপকারী বিষয়গুলো থেকে উপকৃত হওয়া যায় এবং এতে থাকা বাতিল বিষয়গুলো থেকে বেঁচে থাকা যায়।

শাইখ আব্দুল আযীয বিন বায রাহিমাহুল্লাহকে মানবরচিত আইন পড়ার ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল। তিনি উত্তর দেন: ‘আইনের ছাত্র ও শিক্ষকেরা কয়েক প্রকার:

প্রথম প্রকার: যে এই সাবজেক্ট পড়ে এর প্রকৃত রূপ জানার জন্য কিংবা এর উপর শরয়ি বিধি-বিধানের শ্রেষ্ঠত্ব জানার জন্য অথবা এর থেকে এমন উপকার গ্রহণের জন্য যা পবিত্র শরীয়তের সাথে কোনো দিক থেকে সাংঘর্ষিক নয় অথবা অন্যকে এ বিষয়ে উপকৃত করার জন্য। আমার মতে শরয়ি দৃষ্টিতে এতে কোন আপত্তি নেই। বরঞ্চ সে যদি মানবরচিত আইনের ত্রুটিগুলো বর্ণনা করে এবং এর উপর শরয়ি বিধানের শ্রেষ্ঠত্ব তুলে ধরতে চায়; তাহলে এর জন্য সে নেকী পাবে। এদের হুকুম ঐ সমস্ত লোকদের মতো, যারা সুদের বিধান, মদের প্রকার, জুয়ার প্রকার প্রভৃতি এবং এর অনুরূপ বিষয়াবলি যেমন বাতিল আকীদা পড়ে বা পড়ায় যাতে করে সেগুলোকে জানতে পারে, সেগুলোর ব্যাপারে আল্লাহর বিধান অবগত হতে পারে এবং অন্যকে এ বিষয়ে অবগত করতে পারে। সাথে তারা এ বিশ্বাস রাখে যে এগুলো হারাম, যেমনিভাবে পূর্বে উল্লিখিত ব্যক্তিরা বিশ্বাস রাখে যে, মহান আল্লাহর শরীয়তের বিরোধী মানবরচিত আইন হারাম। এর বিধান ঐ ব্যক্তির মত নয় যে নিজে জাদু শিখে বা অন্য কাউকে জাদু শেখায়। কারণ জাদু স্বত্ত্বাগতভাবে হারাম; যেহেতু এতে রয়েছে শির্ক এবং আল্লাহ ছাড়া জীনের ইবাদত করা। যে ব্যক্তি জাদু শিখে বা অন্যকে শেখায় সে শির্ক করা ছাড়া জাদু শিখতে পারে না। অন্যদিকে যে আইন শিখে এবং অন্যকে শেখায়, সে নিজের বিচার করা অথবা হালাল বলে বিশ্বাস করার জন্য নয়; বরং বৈধ অথবা শরয়ি উদ্দেশ্যে শিখে থাকে যেমনটি ইতঃপূর্বে উল্লেখ করা হয়েছে ...’ [সমাপ্ত][মাজমূ’ ফাতাওয়া ইবনে বায: (২/২৩১)] (12874) নং প্রশ্নের উত্তরে তাঁর বক্তব্যের অবশিষ্টাংশ দেখুন।

এই বিষয়গুলোর ছাত্রের শরয়ি বিধি-বিধান সম্পর্কে জ্ঞান থাকা; যাতে করে আপতিত সংশয় ও বাতিলের দ্বারা ধোঁকাগ্রস্ত হওয়া থেকে সে নিরাপদে থাকে। যদি কোনো বিষয়ে তার সংশয় আসে তাহলে সে যেন তৎক্ষণাৎ আলেমদেরকে জিজ্ঞাসা করে; যাতে করে মিথ্যা থেকে সত্যকে এবং ভুল থেকে সঠিককে পৃথক করতে পারে।

স্থায়ী কমিটির ফতোয়া সমগ্রে (১৪/২৩২) এসেছে: ‘বাস্তবায়ন করার উদ্দেশ্যে মানবরচিত আইন পড়া জায়েয নেই; যদি তা আল্লাহর শরীয়তের বিরোধী হয়। আর যদি এটি এ উদ্দেশ্য নিয়ে পড়া হয় যে, এতে বিদ্যমান সত্য বিচ্যুতি তুলে ধরা এবং এর বিপরীতে ইসলামের ন্যায়, সঠিকতা ও সত্যতা তুলে ধরা এবং মানুষের স্বার্থ রক্ষার জন্য ইসলামে যা আছে তাই যথেষ্ট হওয়াকে বর্ণনা করা; তাহলে এটি পড়া জায়েয। কোন মুসলিমের জন্য দর্শন ও মানবরচিত আইন পড়া জায়েয হবে না; যদি তার কাছে মিথ্যা থেকে সত্যকে আলাদা করার মত শক্তি না থাকে; যেহেতু সে বিভ্রান্তিতে পড়ে যেতে পারে এবং সরল পথ থেকে বিচ্যুত হয়ে যেতে পারে। আর যে ব্যক্তি কুরআন-সুন্নাহর জ্ঞানার্জন করার পর এ জ্ঞানগুলোকে হজম করা ও বোঝার শক্তি রাখে তার জন্য এগুলো পড়া এ দিক থেকে জায়েয হবে যে, সে যেন ভালো থেকে মন্দকে আলাদা করতে পারে, সত্যকে সত্য বলে প্রতিষ্ঠা করতে পারে এবং মিথ্যাকে মিথ্যা হিসেবে সাব্যস্ত করতে পারে। তবে এ পড়া যেন তাকে এমন কিছু থেকে ব্যস্ত না রাখে শরীয়তের দৃষ্টিতে যা তার উপর আরো অধিক আবশ্যকীয়। এর থেকে বোঝা যায়, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও ইনস্টিটিউটগুলোতে এ জ্ঞানগুলো সাধারণভাবে শেখানো যাবে না। বরং বিশেষ ব্যক্তিবর্গ এগুলো শিখতে পারেন, যাতে করে তারা সত্যের পক্ষাবলম্বন ও মিথ্যার অপনোদনের মাধ্যমে তারা ইসলামী দায়িত্ব পালন করতে পারেন।’

আল্লাহই সর্বজ্ঞ।

সূত্র

সূত্র

ইসলাম জিজ্ঞাসা ও জবাব

টেক্সট ফরম্যাটিং অপশন

at email

নিউজ লেটার পেতে সাবস্ক্রাইব করুন

নিয়মিত আপডেট ও ওয়েবসাইটের নিত্য নতুন তথ্য পেতে ইমেইল দিয়ে সাবস্ক্রাইব করুন

phone

ইসলাম প্রশ্ন এবং উত্তর অ্যাপ্লিকেশন

কন্টেন্টে আরও দ্রুত অনুসরণ করুন এবং ইন্টারনেট ছাড়া ব্রাউজ করার সুযোগ

download iosdownload android