বৃহস্পতিবার 18 রমজান 1445 - 28 মার্চ 2024
বাংলা

যে ব্যক্তি কোরবানী করতে ইচ্ছুক তিনি যা কিছু থেকে বিরত থাকবেন

প্রশ্ন

যে ব্যক্তি কোরবানী করতে ইচ্ছুক তার জন্যে কি চুল কাটা ও নখ কাটা জায়েয?

উত্তর

আলহামদু লিল্লাহ।.

শাইখ আব্দুল আযিয বিন বায (রহঃ) বলেন:

কোরবানী করতে ইচ্ছুক কেউ যদি যিলহজ্জ মাসের প্রবেশ করে; সেটা চাঁদ দেখার মাধ্যমে হোক কিংবা যিলক্বদ মাসের ৩০ দিন পূর্ণ হওয়ার মাধ্যমে হোক, সে ব্যক্তির জন্য তার কোরবানীর পশু জবাই করার আগ পর্যন্ত চুল, নখ কিংবা চামড়ার কিছু অংশ কাটা হারাম। যেহেতু উম্মে সালামা (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত হাদিসে এসেছে যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন: "যখন তোমরা যিলহজ্জ মাসের চাঁদ দেখবে"। অন্য এক ভাষ্যে "যখন যিলহজ্জের (প্রথম) দশক প্রবেশ করবে এবং তোমাদের কেউ কোরবানী করতে ইচ্ছুক হয় তাহলে সে যেন তার চুল ও নখ না কাটে।"[মুসনাদে আহমাদ ও সহিহ মুসলিম] অন্য এক ভাষ্যে এসেছে যে, "কোরবানী করার আগ পর্যন্ত সে যেন তার চুল ও নখের কোন কিছু না কাটে"। অপর এক ভাষ্যে রয়েছে "সে যেন তার চুল ও চামড়ার কোন কিছুতে হাত না দেয়"। আর যদি সে ব্যক্তি (প্রথম) দশক শুরু হওয়ার পর কোরবানী করার নিয়ত করে তাহলে যখন থেকে নিয়ত করেছে তখন থেকে এগুলো কাটা থেকে বিরত থাকবে। নিয়ত করার আগে এগুলো কেটে থাকলে সে জন্য কোন গুনাহ হবে না।

এ নিষেধাজ্ঞার গূঢ় রহস্য হল: কোরবানীকারী ব্যক্তি হাজী সাহেবের সাথে হজ্জের একটি কর্মে অংশীদার হচ্ছেন। সেটি হচ্ছে- পশু জবাই করার মাধ্যমে আল্লাহ্‌র নৈকট্য হাছিল করা। তাই ইহরামের কিছু বৈশিষ্ট্যের ক্ষেত্রেও তিনি হাজীসাহেবের সাথে অংশ গ্রহণ করছেন। সেটা হচ্ছে- চুল ও ইত্যাদি কাটা থেকে বিরত থাকা।

এ বিধানটি কোরবানীকারীর জন্য খাস। পক্ষান্তরে, যার পক্ষ থেকে কোরবানী করা হচ্ছে তার সাথে এ বিধানটি সম্পৃক্ত নয়। কেননা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: "তোমাদের কেউ যদি কোরবানী করতে ইচ্ছুক হয়" তিনি বলেননি যে, "তার পক্ষ থেকে কোরবানী করা হয়"। তাছাড়া নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর পরিবারের সদস্যগণের পক্ষ থেকে কোরবানী করেছেন। কিন্তু, এমন কোন বর্ণনা আসেনি যে, তিনি তাদেরকে এগুলো কর্তন করা থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দিয়েছেন।

এ দলিলের ভিত্তিতে কোরবানীকারীর পরিবারের জন্য যিলহজ্জ মাসের প্রথম দশকের দিনগুলোতে চুল, নখ ও চামড়া কর্তন করা জায়েয। আর কোরবানীকারী ব্যক্তি যদি তার চুল, নখ কিংবা চামড়ার কোন কিছু কেটে ফেলেন তাহলে তার কর্তব্য হল‑ আল্লাহ্‌র কাছে তওবা করা এবং পুনরায় এমন কর্ম না করা; তবে তার উপর কোন কাফ্‌ফারা বর্তাবে না। তবে এগুলো কর্তন করার কারণে তাকে কোরবানী করা থেকে বারণ করা হবে বিষয়টি এমন নয়­­‑ যেমনটি কিছু কিছু আম মানুষ ধারণা করে থাকেন। আর যদি ভুলবশতঃ কিংবা অজ্ঞতাবশতঃ এগুলো কেটে থাকেন কিংবা অনিচ্ছা সত্ত্বেও কোন চুল পড়ে যায় তাহলে এর জন্য সে ব্যক্তি গুনাহগার হবেন না। আর যদি এগুলো কাটাটা তার একান্ত প্রয়োজন হয়ে পড়ে, তাহলে তিনি এগুলো কাটতে পারেন; এর জন্য তাকে কোন কাফ্‌ফারা দিতে হবে না। যেমন- কারো নখ ভেঙ্গে যদি তার কষ্টের কারণ হয় তখন তিনি সে নখটি কেটে ফেলবেন। কিংবা কারো চুল যদি চোখের উপর নেমে আসে তাহলে তিনি সে চুলগুলো কেটে ফেলবেন। কিংবা কোন ক্ষতস্থানের চিকিৎসার জন্য যদি চুল কাটা প্রয়োজন হয় ইত্যাদি ক্ষেত্রে।

সূত্র: ফাতাওয়া ইসলামিয়্যা (২/৩১৬)