Islam QA ওয়েবসাইটের জন্য দান করুন

আমরা আশা করছি, আপনাদের ওয়েবসাইট Islam Q&A (ইসলাম জিজ্ঞাসা ও জবাব) কে সাপোর্ট দেয়ার জন্য মুক্তহস্তে দান করবেন; যাতে করে ইনশা আল্লাহ্‌ ইসলাম ও মুসলিম উম্মাহর সেবায় আপনাদের ওয়েবসাইট তার পথ চলা অব্যাহত রাখতে পারে।

من حج فلم يرفث... হাদিসটির অর্থ কী?

01-10-2015

প্রশ্ন 41811

 নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বাণী:

من حج فلم يرفث ولم يفسق رجع من ذنوبه كيوم ولدته أمه  

(অর্থ- যে ব্যক্তি হজ্জ আদায় করল, কিন্তু কোন যৌনাচার কিংবা পাপ করল না সে যেন ঐ দিনের ন্যায় ফিরে এল যে দিন তার মা তাকে প্রসব করেছে)?

উত্তর

আলহামদু লিল্লাহ।.

হাদিসটি বুখারি (১৫২১) ও মুসলিম (১৩৫০) আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন যে, তিনি বলেন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: “যে ব্যক্তি হজ্জ আদায় করল; কিন্তু কোন যৌনাচার কিংবা পাপ করল না সে ঐ অবস্থায় ফিরে আসবে যে অবস্থায় তার মা তাকে প্রসব করেছে।”

তিরমিযির এক বর্ণনায় (৮১১) এসেছে-“তার পূর্বের সব গুনাহ মাফ করে দেয়া হবে।”[আলবানি সহিহ তিরমিযি গ্রন্থে হাদিসটিকে সহিহ বলেছেন]

এ হাদিসটি আল্লাহ তাআলার সে বাণীর মত-

 الْحَجُّ أَشْهُرٌ مَعْلُومَاتٌ فَمَنْ فَرَضَ فِيهِنَّ الْحَجَّ فَلا رَفَثَ وَلا فُسُوقَ وَلا جِدَالَ فِي الْحَجِّ 

“অর্থ- হজ্বের নির্দিষ্ট কয়েকটি মাস আছে। যে ব্যক্তি সেসব মাসে নিজের উপর হজ্ব অবধারিত করে নেয় সে হজ্বের সময় কোন যৌনাচার করবে না, কোন গুনাহ করবে না এবং ঝগড়া করবে না।”[সূরা বাকারা (২): ১৯৭]

الرفث বলা হয় অশ্লীল কথাকে। মতান্তরে, সহবাসকে।

ইবনে হাজার বলেন:

হাদিসে الرفثদ্বারা এর চেয়ে ব্যাপক অর্থ উদ্দেশ্য। কুরতুবীও এ মতের দিকে ধাবিত হয়েছেন। রোজা সংক্রান্ত হাদিস ( فَإِذَا كَانَ صَوْم أَحَدكُمْ فَلا يَرْفُث ) (অর্থ- তোমাদের কেউ যেদিন রোজা রাখে সে যেন رفث না করে) এর বাণীতেও একই ব্যাপকতা উদ্দেশ্য। সমাপ্ত

অর্থাৎ হাদিসে رفث শব্দটি অশ্লীল কথা ও সহবাস উভয়টিকে শামিল করে।

হাদিসের বাণী: ولم يَفْسُقْ এর মানে হচ্ছে- কোন পাপকাজ কিংবা অবাধ্যতামূলক কাজ করেনি।

হাদিসের বাণী: كَيَوْمِوَلَدَتْهُأُمّه (অর্থ-ঐ দিনের ন্যায় ফিরে এল যে দিন তার মা তাকে প্রসব করেছে) অর্থাৎ- নিষ্পাপভাবে।

হাদিসের আপাত অর্থ হচ্ছে- এতে সগিরা-কবিরা উভয় প্রকার গুনাহ মাফ হবে- এটি ইবনে হাজার বলেছেন।

কুরতুবী, কাযী ইয়ায প্রমুখ এ অভিমত ব্যক্ত করেছেন। তিরমিযি বলেন: মাফ পাওয়ার বিষয়টি সেসব গুনাহর সাথে খাস যেগুলো আল্লাহর অধিকারের সাথে সম্পৃক্ত; বান্দার অধিকারের সাথে নয়। মুনাওয়ি ‘ফায়যুল কাদির’ গ্রন্থে একই কথা বলেছেন।

শাইখ উছাইমীন (রহঃ) বলেন: নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বাণী:

من حج فلم يرفث ولم يفسق رجع من ذنوبه كيوم ولدته أمه (অর্থ- যে ব্যক্তি হজ্জ আদায় করল, কিন্তু কোন যৌনাচার কিংবা পাপ করল না সে যেন ঐ দিনের ন্যায় ফিরে এল যে দিন তার মা তাকে প্রসব করেছে) অর্থাৎ কোন মানুষ যদি হজ্জ আদায় করে এবং আল্লাহ যা কিছু হারাম করেছেন সেসব থেকে বিরত থাকে ; সেসব হারাম বিষয়ের মধ্যে রয়েছে- رفث তথা নারী গমন, فسوق তথা আল্লাহর আনুগত্যের লঙ্ঘন। আল্লাহর আনুগত্যের লঙ্ঘন না করতে হলে আল্লাহ যা কিছু ফরজ করেছেন সেগুলো বর্জন করবে না এবং আল্লাহ যা কিছু হারাম করেছেন সেগুলোতে লিপ্ত হবে না। এর ব্যতিক্রম কিছু করলে তো সে فسوقতথা পাপ করল। অতএব, কোন ব্যক্তি যদি হজ্জ আদায় করে এবং فسوق ও رفث না করে তাহলে সে গুনাহ থেকে পুতপবিত্র হয়ে বের হবে যেভাবে মানুষ তার মাতৃগর্ভ থেকে নিষ্পাপভাবে বের হয়। অনুরূপভাবে এ ব্যক্তি যিনি এ শর্ত পূর্ণ করে হজ্জ আদায় করেছেন তিনিও গুনাহ থেকে পুতপবিত্র হয়ে বের হবেন।[শাইখ উছাইমীনের ফতোয়াসমগ্র (২১/২০)]

তিনি আরও (২১/৪০) বলেন: হাদিসটির বাহ্যিক অর্থ হচ্ছে- হজ্জের মাধ্যমে কবিরা গুনাহও মাফ হবে। সুতরাং কোন দলিল ছাড়া আমরা এ বাহ্যিক অর্থকে এড়িয়ে যেতে পারি না। কোন কোন আলেম বলেন: পাঁচ ওয়াক্ত নামায যখন কবিরা গুনাহ মোছন করে না; অথচ নামায হজ্জের চেয়ে মহান ইবাদত ও আল্লাহর নিকটে প্রিয়; সুতরাং হজ্জ কবিরা গুনাহ মোছন না করাটাই স্বাভাবিক। কিন্তু আমরা বলব: হাদিসের বাহ্যিক অর্থ এটাই। আল্লাহর বিধিবিধানের মধ্যে অনেক গূঢ়রহস্য রয়ে আছে এবং সওয়াবের ক্ষেত্রে কোন যুক্তি চলে না।[কিঞ্চিত পরিমার্জিত ও সমাপ্ত]

হজ্জের বিবিধ মাসয়ালা
ইসলাম জিজ্ঞাসা ও জবাব ওয়েবসাইটে দেখান